ক্যাট’স-আই (Cat’s Eye)
উপাদান (Chemical Composition): সিলিকন, ম্যাগনেসিয়াম, বেরিলিয়াম সংমিশ্রণে সৃষ্ট।
উপকারিতা: জ্যোতিষশাস্ত্রে এই পাথরটি অশুভ কেতু গ্রহের প্রতিকারের রত্ন। জ্যোতিষশাস্ত্রমতে, ইহা ব্যবহারে রহস্যপূর্ণ জটিলতা, গোপন শত্রুতা, কোন প্রকার দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। কথিত আছে এই পাথরটি সঙ্গে থাকলে সর্প দংশন করে না। ভারতে একে অশুভ নাশকারী রত্ন হিসেবে গণ্য করা হয়। উচ্চস্থান থেকে পতিত হবার থেকে রক্ষা করে।
আমাদের সংগ্রহে থাকা ক্যাটস আই দেখতে এখানে ক্লিক করুন – Natural Cat’s Eye (ক্যাটস-আই/ বৈদুর্য্যমণি)
ক্যাট’স আই বা বৈদুর্য্যমণি (Cat’s Eye) – চকচকে উজ্জ্বল রত্ন । উপরের ভাগ পালিশ করা এবং নীচের পিট পালিশহীন হয়ে থাকে । এই রত্নটির উপরের স্থল থেকে উজ্জ্বল আলোর সুতোর মত দাগ থাকে। রত্নটিকে নাড়ালে দাগগুলি নড়তে দেখা যায়। এটাকে “বিড়াল অক্ষি” ও বলা হয় । কারণ রত্নটি দেখতে অনেকটা বিড়ালের চক্ষুর মত ।
এটিকে আরবীতে লহসনিয়া বলে। বর্ণের দিক থেকে সবুজ, সাদা আভাযুক্ত ও ছাই রঙ- এর মত হয় । প্রকার ভেদে বৈদুর্য্যমনি কয়েক প্রকার যেমন – কনকক্ষেত্রী, ঘিক্ষেত্রী, ধূম্রক্ষেত্রী । আসল বৈদুর্যমণি কষ্টি পাথরে ঘর্ষণ করলে বর্ণ ও উজ্জ্বলতা নষ্ট হয় না বরং লাবণ্য আরো প্রকাশ পায় । বৈদুর্য্যমণি ক্রাইসোবেরিল (Chrysoberyl) গোত্রের রত্ন । বৈদুর্য্যমণি পাথরটি এদিক – ওদিক ঘুরালে বেড়ালের চোখের মতে চকচক করে ওঠে । এই ধর্মটির পারিভাষিক নাম Chatoyancy। কিন্তু এই ধরণের সব পাথরকেই বৈদুর্য্যমণি বলা যাবে না।
যে পাথরের কাঠিন্য খুব বেশী, বহু বছর পরেও ক্ষয়ে যাবে না । সেই পাথরে যদি আলোর খেলা দেখা যায় তবে তা হবে বৈদুর্য্যমণি । এই রকম পাথর হচ্ছে ক্রাইসোবেরিল । রাসায়নিক নাম বেরিলিয়াম অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড । আবার যে ক্রাইসোবেরিলে সামান্য লোহার অনুর মিশ্রণ আছে তাদের রং মধুর মতো হালকা সোনালি ।
এর পারিভাষিক নাম ‘সাইমোফেন’ উৎকৃষ্টতম বৈদুর্য্যমণি এগুলোই । ‘ক্যাবোকন’ আকৃতিতে রত্নটিকে কাটলে একটা উজ্জ্বল নীল আলোর বিন্দু ফুটে উঠে বেড়ালের চোখের মণির মত দেখায় । প্রাচীন শ্রীলংকায় কান্তির রাজার একটি বৈদুর্য্যমণি এমনভাবে কাটা হয়েছিল যে, তাতে এ রত্নের স্বাভাবিক দাগগুলোর মাধ্যমেই মশালে আলোকিত একটি দেবীর ছবি ফুটে উঠতো। আগ্নেয়গিরি লাভা ঠান্ডা হলে তার মধ্যে মাঝে মাঝে এক ধরণের গিরি কাচ পাওয়া যায়।
সেগুলি লাল, ধূসর কিংবা কালো-বিভিন্ন রঙের হতে পারে। সেগুলিতে থাকে সোডিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রণ ও অ্যালুমিনিয়াম। সেগুলির ফাকে ফাকে আরেক ধরণের সুতোর মতো পাথর দেখা যায়। পরিস্কার ও পালিশ করে সেগুলিকে বৈদুর্য্যমনি হিসেবে বাজারে চালিয়ে দেয়া হয়। এটা এক ধরণের নকল মণি। গলিত কাচের সাথে লেড অক্সাইড, ফ্লোরিন ও বেরিল যোগ করে তৈরি করা হয় আরেক জাতের নকল বৈদুর্য্যমনি। আজকাল বাজারে বৈদুর্য্যমনি বা ক্যাটসআই পাওয়া যায় সিংহল ও ব্রাজিলে।
প্রাপ্তিস্থান: শ্রীলংকা ও ইন্ডিয়াতে মুলত ক্যাটস আই বা বৈদুর্য্যমনি পাওয়া যায়।