পৃথিবীতে হীরা সবচেয়ে দুস্প্রাপ্য ও মূল্যবান খনিজ ও “আলো-ঝলমলে” পদার্থ। হীরার বহুতলে আলো বার-বার একে বেকে যায় বলেই তৈরী হয় বহু রঙা আলোর ফোয়ারা। বিন্দু ও রেখাবর্জিত সাদা উজ্জ্বল হীরাকে শ্রেষ্ঠ বলে মনে করা হয় এবং তার নাম দেওয়া হয়েছে “কমলহীরা”। খাঁটি বা প্রাকৃতিক হীরা শীতল ও পিচ্ছিল জ্যোতি দেখা যায়। আসল হীরা আগুনে পোড়ালে কয়লা হয়ে যায়। সকলেই জানে যে হীরা দ্বারা কাঁচ কাটা যায়। খনি থেকে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হীরা উজ্জ্বল ও জ্যোতির্ময় থাকে না। হীরা কাটিং ও পলিশ না করলে তার ভেতরকার জৌলুস প্রকাশ পায় না। একে কেটে পলিশ করে উজ্জ্বল জ্যোতির্ময় করে গড়ে তোলা হয়। আজ পৃথিবীর ভারতের বোম্বে, ইসরাইলের তেলআভিব, থাইল্যান্ডের ব্যাংকক, বেলজিয়াম এ্যানটোরপ ও আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরে হীরা কাটিং ও পলিশিং করা হয়।
হীরা পাথরকে শুক্র গ্রহের পাথর বলা হয়ে থাকে। যাদের বৃষ রাশি (Taurus, April 21- May20), মিথুন রাশি (Gemeni, May 21- Jun 20), তুলা রাশি (Libra, Sept: 21 – Oct 20) ও কন্যা রাশি (Virgo, Aug 21-Sept 20) তাদের জন্য বিশেষ উপকারী হীরা পাথর। তেজ, সন্মান, গৌরব, বল বৃদ্ধি, দৈহিক লাবণ্য বৃদ্ধি, দাম্পত্য সুখ ও শুক্র গ্রহের অশুভ প্রভাব দূর করে।
প্রাপ্তিস্থান: ভারতের খুবই পুরাতন ও উত্তম হীরার খনি ছিলো গোলকুন্ডা খনি। কিন্তু বর্তমানে এই খনি পরিত্যক্ত। ১৭২৫ সালে আর একটি হীরার খনি আবিষ্কার হয় ব্রাজিলে। ব্রাজিলের খনি থেকেও উজ্জ্বল বড় হীরা পাওয়া যায়। অতঃপর এ যুগে দক্ষিণ আফ্রিকার কিম্বারলেতে বৃহত্তম হীরা খনির সন্ধান পাওয়া গেছে। সেখানকার হীরা সুন্দর ও উন্নতমানের। বর্তমানে পৃথিবীর ৯০ ভাগ চাহিদা পূরণ করছে কিম্বারলে একাই। পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে লম্বা হীরার খনি দক্ষিণ আফ্রিকার কিম্বারলেতে। এছাড়া হীরা পাওয়া যায় দক্ষিণ আমেরিকা, অষ্ট্রেলিয়া প্রভৃতি স্থানে। ১৯৭৯ সালে আরেকটি বড় হীরার খনি আবিষ্কৃত হয় পশ্চিম অষ্ট্রেলিয়ায়। ১৯৮৮ সালে অষ্ট্রেলিয়া ৩৪ মিলিয়ন ক্যারেট হীরার সন্ধান পায়। যা, গোটা পৃথিবীর হীরার তিন চতুর্থাংশের সমান। লন্ডনের ডিবাইর্স সেন্ট্রাল সেলিং অর্গানাইজেশনের মূল ভবনেও প্রচুর পরিমানে হীরা আবিষ্কৃত হয়।
(Benefits of wearing Diamond Stone) হীরা পাথরের উপকারিতা ও গুনাগুণঃ
আপনি হয়তো হীরা পাথর ব্যবহার করছেন অথবা ব্যবহার করার চিন্তা করছেন, কিন্তু কিন্তু মনে মনে ভাবছেন হীরা ব্যবহারে কি কি উপকার পাওয়া যেতে পারে যদি আল্লাহ্ চান। এখানে পাচ্ছেন হীরা পাথর ব্যবহারের উপকারিতাঃ
১. যে সকল মানুষ সঙ্গিত, অভিনয়, জনসংযোগ, চিত্রশিল্প অথবা লেখালেখির সাথে জড়িত তাদের জন্য হীরা খুব খুব উপকারী।
ব্যবহারকারী খুব দ্রুত উপকার পেতে পারে হীরা ব্যবহারে।
২. সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি করতে পারে হীরা পাথর এবং তা দীর্ঘ সময় ধরে রাখতে সাহায্য করে থাকে।
৩. সিদ্ধান্ত গ্রহনের ক্ষমতা, ব্যবস্থাপনা ক্ষমতা এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এর পাথর।
৪. সামাজিক কাজে অংশ গ্রহন, অসহায়ের সাহাজ্জর ইচ্ছা শক্তি বৃদ্ধি করে।
৫. আইনগত বিষয়ে বিশেষ সাহায্য পাওয়া যেতে পারে হীরা ব্যবহারে, শত্রু সাথে জয়ী হবার শক্তি যোগায়।
৬. যে সকল স্ত্রী লোক নিজেরে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে চায়, অন্যদের সামনে সুন্দর ভাবে হাজির হতে চায় তাদের জন্য হীরা খুব উপকারী।
৭. ডায়াবেটিক, অনিদ্রা ও নিরাপদ সন্তান জন্ম দেবার জন্য উপকারী হতে পারে এ পাথর।
৮. যে সকল মেয়েদের সাংসারিক জীবনের সমস্যা রয়েছে তারা এ পাথর ব্যবহার করতে পারেন।
৯. হীরা পাথর সম্পর্কের মধ্যে আনন্দ, ভালোবাসার জন্ম দেয়। বৈবাহিক জীবনেও এর প্রভাব রয়েছে।
১০. হীরা পাথর শয়তানের খারাপ প্রভাব, ভয় ভিতি দূর করে আত্ম বিশ্বাস বৃদ্ধি করে।
১১. ঘুমের মাঝে দুঃস্বপ্ন দেখা থেকে রক্ষা করে হীরা পাথর এবং প্রশান্তির ঘুমে সাহায্য করে।
১২. এ পাথর হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
১৩. মধ্য যুগ থেকেই মনে করা হয় হীরা পাথর প্রশান্তির ঘুম, উন্নতি, সম্মান এবং ইচ্ছা শক্তি বৃদ্ধি করে।
তথ্যসুত্রঃ www.arcsm.in